আওয়ামী দোসর ও ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মা নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি খুলনার ট্রাস্টি এবং প্রশাসনে থাকা দোষীদের বহিস্কার ও শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খুলনা মহানগরীর মজিদ সরণীতে অবস্থিত ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসের সামনের সড়কে এ বিক্ষোভ করেন তারা।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ট্রাস্টি তৌহিদুল ইসলাম আজাদ ২০১৮ এবং ২০২৩ সালে খুলনার মেয়র নির্বাচনে ভার্সিটিতে মিটিং করে ভার্সিটির শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরে আওয়ামী দোসর খালেক তালুকদারের পক্ষে প্রচারণায় বাধ্য করে। ভার্সিটির ফান্ডের টাকা এই প্রচারনায় ব্যায় করে এবং ভিন্ন পন্থায় ভার্সিটি থেকে প্রচুর টাকা উত্তোলন করেছে। এর সাথে সার্বক্ষণিক প্রভাব বিস্তার করেছে ট্রাস্টি সৈয়দ মো: ওবায়দুল্লাহ রিপন, ট্রাস্টি পবিত্র কুমার সরকার।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে যে সকল শিক্ষক- ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের পক্ষে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সমর্থন জানিয়েছিল, তাদের স্ক্রিনশট রেখে দিত পবিত্র কুমার সরকার ও সৈয়দ মো: ওবায়দুল্লাহ রিপন। এদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে কেসিসির মেয়র অফিসে জমা দিত তৌহিদুল ইসলাম আজাদ। গণঅভ্যুত্থান সফল না হলে এ সকল শিক্ষকগণ চাকুরিচ্যুত পর্যন্ত হতে পারত।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন মৃত্যু মুখে, তখন নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ফেসবুক পেইজ থেকে আগস্টের ২ থেকে ৮ আগস্ট ২০২৪ এ্যাডমিশন ফেয়ারের বিজ্ঞাপন দেয়। এই তিন জন ট্রাস্টি, ভিসি এবং ট্রেজারারকে ব্যবহার করে আন্দোলনের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে প্রভাবিত করতে এই কাজ করেছে। শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে, তাদের বিজ্ঞাপন বড়? ফ্যাসিস্ট প্রশাসন কে এর জবাব দিতে হবে।
এসময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ২০১৩ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকার অধিক এই ট্রাস্টি বোর্ড আত্ত্বসাৎ করেছে। প্রতিষ্ঠার ১২ বছরে পার্মানেন্ট ক্যাম্পাস না করে একের পর এক কথা শুনিয়ে টাকা আত্মসাৎ করে যাচ্ছে। অন্যদিকে তৌহিদুল ইসলাম আজাদ, ওবায়দুল্লাহ রিপন প্রায় ১ কোটি টাকার কাজ বিনা টেন্ডারে করিয়েছে। ভিসি এবং ট্রেজারার কে ব্যবহার করে।
প্রতিষ্ঠার ১২ বছরে সমাবর্তন না করে বর্তমান ফান্ড থেকে টাকা আত্মসাতের পথ খুজছে। এই টাকা আত্মসাত বন্ধ করতে পরিচালনা পরিষদে সুষ্ঠু তদন্তের আগ পর্যন্ত ছাত্র-শিক্ষক প্রতিনিধি চাই। বর্তমান ট্রাস্টিদের ভিতর কেউ চেয়ারম্যান পদে থাকতে পারবেনা, নতুন গ্রহণযোগ্য কাউকে দিতে হবে। অন্যথায় জুলাই বিপ্লবের শিক্ষার্থীরা হুমকির ভিতর থাকবে এবং বর্তমান দোষী ট্রাস্টিদের বাঁচাতে চাইবে।
শিক্ষার্থীরা এসব লোকের ব্যক্তিগত অপরাধের আমলনামাও তুলে ধরে বলেন, পবিত্র কুমার সরকার এর অন্তবর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে উসকানি মূলক ফেসবুক পোস্ট রয়েছে। ২০১৯ সালে ছাত্রলীগ নেতার মাধ্যমে আইন বিভাগের সমস্যা সমাধানের কথা বলে ১৫ লাখ টাকা আত্তসাৎসহ অন্যান্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
বিক্ষোভে বক্তব্য দেন নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রিফাত, রাফিদ, রাব্বি, ফরহাদ হোসেন নাহিদ, তাসিক প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী দোসর ও ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মা ট্রাস্টি এবং দোষী প্রশাসনের বহিস্কার ও শাস্তির দাবিতে প্রয়োজনে আরো কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সেখ মোঃ এনায়েতুল বাবর বলেন, ট্রাস্টি বোর্ড নিয়ে কথা বলার এখতিয়ার নেই আমার। তারপরও বলছি, সংস্কারের অংশ হিসেবে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেককে পরিবর্তন করা হয়েছে। ৩০ জন ছাত্র আন্দোলনে নেমেছে এটা কতটা যৌক্তিক তা আমার জানা নেই।
খুলনা গেজেট/ টিএ